বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেওয়া স্বাধীনতা পদক জাতীয় জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা পদকটি নিয়ে যান।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক বীর উত্তম জিয়াউর রহমানকে দেওয়া এই পদক বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। আজ দলটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা রয়েছে। জাতীয় জাদুঘরের কর্মকর্তারা বলেন, ২০০৩ সালে জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে পদকটি রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে পাঠানো হয়েছিল। সে সময় পুরস্কারের মেডেল ও সম্মাননাপত্র কোনো উত্তরাধিকারকে না দিয়ে জাতীয় জাদুঘরের একটি কর্নারে যথাযোগ্য মর্যাদায় সংরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্যালারি থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর সেটি স্টোর রুমে ছিল। সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ বলেন, জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই পদক বাতিলের। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে তারা পদকটি আমাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। তিনি আরও বলেন, যে কমিটি পুরস্কার দেয়, সে কমিটিই পুরস্কারটি প্রত্যাহার করেছে। তারা বলেছেন, মিউজিয়ামে কর্নারটি থাকবে না। উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পদক সরিয়ে নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার করে সরকার একটি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। এতে মুক্তিযোদ্ধারা অপমানিত বোধ করবেন। তাদের অবমাননা করা হলো। স্বাধীনতায় অবদানের জন্য দেওয়া পুরস্কারকে বিতর্কিত করা হল। এটাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিষয়েও সরকার বিতর্কের দরজা খুলে দিল। মনে রাখতে হবে, যে জাতি স্বাধীনতার বীরদের সম্মান করতে পারে না, তারা সামনে অগ্রসর হতে পারে না। এদিকে পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পরপরই এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যিনি পদক প্রবর্তন করলেন, তিনি বাদ। কিন্তু পদক থাকবে, তার কীর্তিও থাকবে। এটা যে কত বড় সংকীর্ণতা, আত্মঘাতী ও নোংরা কাজ, সেটা আওয়ামী লীগ যেদিন বুঝবে, সেদিন আর শোধরানোরও সুযোগ হয়ত থাকবে না। ২০০৩ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। তখন খালেদা জিয়া সরকারের ওই পদপে জিয়াকে ওপরে তোলার চেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে জাতির জনককে অবমাননার তীব্র সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
No comments:
Post a Comment