মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সরফরাজ আহমেদের অসাধারণ ৯০ রানের উপর ভর করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডেতে ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী পাকিস্তান। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা থেকে কোনরকমে নিজেদের রক্ষা করেছে পাকিস্তান। আগের চার ওয়ানডে জিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে সিরিজে জয়ী হয়েছে।
ইংল্যান্ডের বেঁধে দেয়া ৩০৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ফাস্ট বোলার মার্ক উড যখন তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট তুলে নেয় তখন সফরকারীদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৭৭। এ সময় মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড হয়ত প্রথমবারের মত ঘরের মাঠে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজে জয়ী হতে যাচ্ছে। কিন্তু অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক (৭৭) ও সরফরাজ আহমেদের চতুর্থ উইকেটে ১৬৩ রানের নতুন রেকর্ড পাকিস্তানের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রমিজ রাজা ও সেলিম মালিক মিলে নাগপুরে ১২২ রান করেছিলেন যা এতদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছিল। উভয় ব্যাটসম্যানই অভিষিক্ত স্পিনার লিয়াম ডওসনের বলে সাজঘরের পথ ধরেন। কিন্তু তার আগেই হ্যাম্পশায়ারের এই বাঁহাতি স্পিনার ৮ ওভারে ২ উইকেটে ৭০ রান দিয়ে ফেলেছিলেন। অল-রাউন্ডার ক্রিস জর্ডানের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সোয়ানসি সিটিতে জন্মগ্রহণকারী ইমাদ ওয়াসিম ১০ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটের বিনিময়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন। এ সময় মোহাম্মদ রিজওয়ান ৩৪ ও ওয়াসিম ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। বিশ্রামে থাকার কারনে কাল মঈন আলী, আদিল রশিদ ও ফাস্ট বোলার লিয়াম প্লানকেটের সার্ভিস পায়নি ইংল্যান্ড।
ম্যাচ সেরা আহমেদ বলেছেন, কঠিন এই সিরিজে পুরো দল যেভাবে পারফর্ম করেছে তাতে আমি সত্যিই খুশী। আমাদের একটি পার্টনারশীপের প্রয়োজন ছিল। আমরা জানতাম ডওসন ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ খেলছে। সে কারনেই আমরা কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলার চেষ্টা করি।
পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলী বলেছেন আমরা কিছুটা এগিয়ে থেকে শেষ করতে চেয়েছিলাম। এই জয়টা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। বিশেষ করে ৩০০ রান তাড়া করে জেতাটা সত্যিই স্বস্তিদায়ক। তবে দল নির্বাচন নিয়ে আলাদাভাবে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। লিয়াম ডওসনকে সুযোগ দেয়ায় ভালই হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত সফরে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। গুরুত্বপূর্ণ ঐ দুটি সিরিজে তিনজন স্পিনার খেলানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
প্রথমে ব্যাটিং থেকে ৯ উইকেটে ইংল্যান্ডের করা ৩০২ রানে ইনিংসে জেসন রয় ৮৭ ও বেন স্টোকস করেন ৭৫ রান। ৪০ ওভাওের৫ উইকেটে ২৪৪ রান করা ইংল্যান্ডের কাছ থেকে আরেকটি জায়ান্ট ইনিংস আশা করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তাীনী পেসাররা ইংল্যান্ডকে বেশী দুর যেতে দেয়নি। হাসান আলী ৬০ রানে চারটি ও মোহাম্মাদ আমির ৫০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। জবাবে ১৪তম ওভারে ৩ উইকেটে ৭৭ রান করার পরে পাকিস্তানের জন্য দু:শ্চিন্তা বয়ে আনেন উড। বাবর আজম (৩১) ও আজহার আলীর (৩৩) উইকেট দুটি তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। কিন্তু কাউন্টার এ্যাটাকে মালিক পরের ওভারে ডওসনকে দুটি বল উড়িয়ে মেরে ওভার বাউন্ডারি আদায় করে নেন। উইকেটরক্ষক আহমেদ ৪৪ বলে অর্ধ শতক তুলে নেন। লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম ওয়ানডে শতক হাঁকানো আহমেদ অল্পের জন্য কাল সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে ৩০২ (জেসন ৮৭, স্টোকস ৭৫ : আমির ৩-৫০, হাসান ৪-৬০)
পাকিস্তান ৮ উইকেটে ৩০৪, ৪৮.২ ওভার (সরফরাজ ৯০, শোয়েব ৭৭ : উড ২-৫৬, ডওসন ২-৭০)
ফল : পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান)
ম্যান অব দ্য সিরিজ : জো রুট (ইংল্যান্ড)
আগের ম্যাচের ফল :
২৪ আগস্ট : ১ম ওয়ানডে, সাউদাম্পটন, ইংল্যান্ড ডি/এল মেথডে ৪৪ রানে জয়ী
২৭ আগস্ট : ২য় ওয়ানডে, লর্ডস, ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী।
৩০ আগস্ট : তৃতীয় ওয়ানডে, ট্রেন্ট ব্রীজ, ইংল্যান্ডন ১৬৯ রানে জয়ী
১ সেপ্টেম্বও : চতুর্থ ওয়ানডে, হেডিংলী, ইংল্যান্ড চার উইকেটে জয়ী।
ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে ৩০২ (জেসন ৮৭, স্টোকস ৭৫ : আমির ৩-৫০, হাসান ৪-৬০)
পাকিস্তান ৮ উইকেটে ৩০৪, ৪৮.২ ওভার (সরফরাজ ৯০, শোয়েব ৭৭ : উড ২-৫৬, ডওসন ২-৭০)
ফল : পাকিস্তান ৪ উইকেটে জয়ী
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান)
ম্যান অব দ্য সিরিজ : জো রুট (ইংল্যান্ড)
আগের ম্যাচের ফল :
২৪ আগস্ট : ১ম ওয়ানডে, সাউদাম্পটন, ইংল্যান্ড ডি/এল মেথডে ৪৪ রানে জয়ী
২৭ আগস্ট : ২য় ওয়ানডে, লর্ডস, ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী।
৩০ আগস্ট : তৃতীয় ওয়ানডে, ট্রেন্ট ব্রীজ, ইংল্যান্ডন ১৬৯ রানে জয়ী
১ সেপ্টেম্বও : চতুর্থ ওয়ানডে, হেডিংলী, ইংল্যান্ড চার উইকেটে জয়ী।
No comments:
Post a Comment