একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের একাত্তরে চট্টগ্রামের আল-বদর কমান্ডারের ফাঁসি কার্যকরের পর তারা এ প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ বিচারে ১৯৭১ এর ডিসেম্বরের আগে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর প্রখ্যাত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পাকিস্তান গভীরভাবে মর্মাহত।
এর আগেও যুদ্ধাপরাধে জামায়াতের অন্যান্য নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান। তার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, অযাচিতভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে পাকিস্তান। মীর কাসেমের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ বিচারের মাধ্যমে বিরোধীদের দমন পুরোপুরি গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ১৯৭৪ সালের ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে পাকিস্তান দাবি করেছে, ক্ষমার আওতায় বিচার না করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেখানে।
এদিকে বরাবরের মতো এবারও জামায়াতে ইসলামী, পাকিস্তান তাদের বন্ধু মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে শোক প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক ফেইসবুক বার্তা তারা বলছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারকেও একই পরিণতি বরণ করতে হবে। মীর কাসেমের জন্য গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দিয়েছে তারা। পাকিস্তানের শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে একাত্তরে যখন মুক্তিকামী বাঙালি সশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তোলে, সে সময় বাঙালির বিপক্ষে গিয়ে পাকিস্তানি দখলদারদের পক্ষ নেয় জামায়াতে ইসলামী।
দলটির সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের চট্টগ্রাম শহর কমিটির সভাপতি কাসেম সেখানে আল-বদর বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। নগরীর পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডে তিনতলা মহামায়া ভবন দখলে নিয়ে ডালিম হোটেল নাম দিয়ে নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তোলেন তিনি। কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে শনিবার তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
No comments:
Post a Comment