কোরআন শেখাচ্ছেন হিন্দু কিশোরী পূজা - সময়ের প্রতিধ্বনি

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, September 7, 2016

কোরআন শেখাচ্ছেন হিন্দু কিশোরী পূজা

শিরোনাম দেখে চোখ কপালে ওঠারই কথা। সন্দেহ হলে চোখ কচলিয়ে আবার দেখুন। হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য কুখ্যাতি থাকা উত্তর প্রদেশে।

এই রাজ্যের আগরারে বসবাস দুই বোন- নন্দিনী ও পূজা কুশওয়াহার। নন্দিনী পড়ান হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভাগবত গীতা। আর পূজা পড়ান কোরআন। এক জনের পড়ানোর মাধ্যম খাঁটি সংস্কৃত ও হিন্দি। অন্য জনের ভরসা বিশুদ্ধ আরবি।

নন্দিনীর ছাত্রছাত্রীরা সকলেই নিম্নবিত্ত হিন্দু পরিবার থেকে আসা। আর পূজারও ৩৫ জন পড়ুয়ার পরিবার হতদরিদ্র মুসলিম।

আগরার কাছে ছোট্ট একটা কলোনি সঞ্জয়নগর। রোজ সন্ধ্যায় কলোনির একমাত্র মন্দির চত্বরে স্কুল বসে। এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুরাই মূলত সেখানে পড়তে আসে। আর সেখানেই পড়ান ওই দুই বোন।

হিন্দু পরিবারের মেয়ে নন্দিনী গীতা এবং হিন্দি পড়াবেন তাতে তেমন আশ্চর্যের নেই হয়তো। কিন্তু, সেই একই পরিবারের ১৮ বছরের এক কিশোরী পূজা অক্ষর, বানান, উচ্চারণ থেকে সব কিছু দিয়েই প্রায় গুলে খেয়েছেন আরবি ভাষাকে।

এলাকায় শিক্ষক হিসাবে পূজার গ্রহণযোগ্যতা নন্দিনীর থেকেও বেশি। একে মেয়ে, তার ওপর আবার অন্য ধর্মের। তা সত্ত্বেও পূজার ওপর অভিভাবকদের অগাধ আস্থা আর ভরসা।

কিভাবে আরবি ভাষা শিখলেন পূজা?
এই মহল্লাতেই সঙ্গীতা বেগম নামে এক মহিলা থাকতেন কয়েক বছর আগে। ধর্মের ব্যাপারে তিনিও ভীষণ মুক্তমনা ছিলেন। তার বাবা ছিলেন মুসলমান আর মা হিন্দু।

সঙ্গীতা বেগমই এলাকায় বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষার প্রথম স্কুল খোলেন। অবৈতনিক সেই স্কুলে পূজা যেত। কোরআন শিক্ষায় সে উৎসাহী হয়ে পড়ে এবং দ্রুত শিখতে থাকে আরবি।

পূজার কথায়, 'এর পর ব্যক্তিগত কারণে একটা সময়ে আর ক্লাস নিতে পারতেন না সঙ্গীতা বেগম। উনি আমাকে অনুরোধ করেন, আমি যাতে ক্লাস নিই। উনার কথা ফেলতে না পেরে আমি রাজি হয়ে যাই, সেই শুরু।'

পূজা কখনোই ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোনো টাকাপয়সা নেন না। সবটাই বিনামূল্যে। দিন দিন তার ক্লাসে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বাড়িতে আর জায়গা হয় না। তাই এলাকার প্রবীণেরা কলোনির মন্দির চত্বরটাকেই স্কুল হিসাবে ব্যবহার করার অনুমতি দেন।

আগরা থেকে দাদরির দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। অথচ ভাবনাগত কত অমিল! বাড়িতে গোমাংস রাখা আছে, এই অভিযোগে গত বছর দাদরিতে বৃদ্ধ মহম্মদ আখলাককে খুন হতে হয় তারই প্রতিবেশী উগ্র হিন্দুদের হাতে।

অন্যদিকে, আগরা থেকে অযোধ্যার দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। সেখানে প্রায় ২৪ বছর আগে ভেঙে ফেলা হয়েছিল পাঁচ শতাব্দীর প্রাচীন বাবরি মসজিদ। কিন্তু সেই একই রাজ্যের পূজা কুশওয়াহা দিচ্ছেন ভিন্ন বার্তা।

সূত্র: আনন্দবাজার।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages