ফর্সা ও দাগবিহীন ত্বকের জন্য ঘরে বসেই ব্লিচ করুন - সময়ের প্রতিধ্বনি

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Sunday, September 25, 2016

ফর্সা ও দাগবিহীন ত্বকের জন্য ঘরে বসেই ব্লিচ করুন


আয়নায় তাকালেন, সবার আগে চোখ চলে গেল ব্রণের দাগটির দিকে, অথবা কালো ছোপটি দৃষ্টি কেড়ে নিল বা এক আধ দিন রোদে ঘুরেছেন? ব্যাস মুখ, হাত আর পা এর পাতার ত্বক দেখে নিজেই নিজেকে চিনতে পারছেন না,
কিন্তু কয়েকদিন পরই হয়ত বা একটা ফাংশান আছে, এখন কী হবে? এমনটা আমাদের সবার সাথেই কখনো না কখনো হয়েছে। কিন্তু তাই বলে কি বাইরে যাব না? ব্রণের দাগটাকে রয়ে যেতে দেব? না, তা নিশ্চয়ই কেউ চান না।
অনেকেই সস্তা ফেয়ারনেস ক্রিম বা কেমিকাল ব্লিচ এর সাহায্যে করতে চান সব সমস্যার সমাধান। পরিচিত কেউ কোন cosmetic ব্যবহার করে ফল পেল, চোখ কান বন্ধ করে কোন কিছু চিন্তা না করে কিনে ফেললেন সেই ক্রিমটি। মনে রাখবেন একজনের ত্বকে যেটা কাজ করেছে আপনার ত্বকে সেটা কাজ নাও করতে পারে, আর সকল রঙ ফর্সাকারী, দাগ দূর করার ক্রিমেই কিছু ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যেমন পারদ, ক্লোরিন ভিত্তিক ব্লিচিং এজেন্ট। উন্নত দেশে এসব উপকরণ হয়ত নিষিদ্ধ নয়ত খুবই moderately  use করা হয়। কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে তার কোন বালাই নেই।তথাকথিত হারবাল ব্লিচ এর উপাদান গুলো একটু পড়ে দেখবেন তো, ওতে আসলে হারবাল কী কী আছে? সাত দিনে ফর্সা দাগহীন ত্বক পান- এমন চটকদার ডায়লগ দিয়ে আর অজ্ঞতা কে পূজি করে এরা চুটিয়ে ব্যাবসা করে যাচ্ছে। আর যারা এর ফাঁদে যারা পা দিচ্ছেন তারা ফ্রী পাচ্ছেন ক্যান্সারের ঝুঁকি, র‍্যাস, অ্যালার্জি ইত্যাদি।
কিন্তু যদি চান তবেই কিন্তু এই সমস্যা গুলোর সমাধান নিজেই করতে পারেন খুব সহজেই। এর জন্য চাই শুধু একটু সময় আর ধৈর্য। আজ আপনাদের শেখাব ঘরে বসেই ব্লিচ করার কিছু পদ্ধতি, যা নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনি সহজেই পাবেন রোদেপোড়া ছোপ্, ব্রণের জেদি দাগ থেকে মুক্তি।

সোর্স টিউনের আরো আর্টিকেল পড়ুনঃ

চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে কিছু ছোট্ট টিপস

সুস্থ ও ঝলমলে চুলের জন্য দই

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করার কিছু সহজ উপায়

মেয়েদের ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক টোনার

ঠোঁটের চারপাশের কালো দাগ দূরার সহজ টিপস

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে ৪টি প্রাকৃতিক খাবার

বিরক্তিকর রুক্ষ ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি খুব সহজেই

শুষ্ক ত্বকের জন্যঃ

-আধা চা চামচ দুধের সর, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া (যদিও কাঁচা হলুদ ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন), এক চা চামচ লেবুর রস (তাজা রস ব্যবহার করবেন)। সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ত্বকে লাগান, পনের মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-আধা চা চামচ মধু, দুই ফোটা বাদাম তেল (এর বদলে তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন), এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে ত্বকে লাগান, পনের মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ তাজা টমেটোর রস, আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে লাগান, পুরো শুকিয়ে যাবার আগেই ধুয়ে ফেলুন।

দ্রষ্টব্যঃ

দুধের সরের বদলে দুধ ব্যবহার করতে পারেন। আর চানা ডালের বেসনের বদলে মসুর ডাল বাটাও ব্যবহার করতে পারেন।
সাধারন ত্বকের জন্যঃ
-এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে ত্বকে লাগান, পনের মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-একটি ছোট আলুর অর্ধেক বেটে নিন, এর সাথে আক চিমটি হলুদ গুঁড়া যোগ করে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
-এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ তাজা টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। তরল মিশ্রণ টি শুকিয়ে গেলে আবার লাগান। এভাবে তিন চার বার করুন। পনের মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্যঃ
-আধা চা চামচ মুলতানি মাটির সাথে এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
-এক চা চামচ লেবুর রস, এক চিমটি হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ তাজা টমেটোর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। তরল মিশ্রণ টি শুকিয়ে গেলে আবার লাগান। এভাবে তিন চার বার করুন। পনের মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-এক চামচ আলুর রসের সাথে আক চামচ লেবুর রস যোগ করুন, তরল মিশ্রণটি মুখে লাগান, শুকিয়ে গেলে আবার লাগান। এভাবে তিন চার বার করুন। বিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

দ্রষ্টব্যঃ

তৈলাক্ত ত্বকে বেসন ব্যবহার করলে তেমন কোন ফল পাবেন না। আর আজকাল আসল মুলতানি মাটি পাওয়াই যায় না। যদি মুলতানি মাটি না পান এর বদলে চালের গুঁড়া ব্যবহার করবেন, এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।
সেনসিটিভ বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্যঃ
যাদের ত্বক সেনসিটিভ তারা উপরে উল্লিখিত ব্লিচ গুলো ব্যবহার করবেন না।
-এক চামচ চালের গুঁড়া নিন তাতে আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। দশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-এক চামচ চালের গুঁড়া, এক চামচ আলুর রস নিন। একত্রে মিশিয়ে মুখে লাগান বিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
-এক কাপ চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পানি ঘোলা হয়ে গেলে সেই পানি মুখে লাগান। ধুয়ে ফেলার দরকার নেই।

দ্রষ্টব্যঃ

সেনসিটিভ ত্বকে যেকোনো কিছু লাগানোর আগে চিবুকে বা গলায়ে একটু লাগিয়ে দেখুন। যদি জ্বালা করে তবে মুখে লাগাবেন না। আপনারা যদি লেবুর রস ব্যবহার করতে না পারেন তবে শুধু চালের গুঁড়াও লাগাতে পারেন।
ঘরে বসে ব্লিচ করার সময় সতর্কতাঃ
-সাতদিনে দুইবার এর বেশি এগুলো ব্যবহার করবেন না। খুব বেশি ব্রণ যুক্ত ত্বকেও ব্যবহার করবেন না। এগুলো ব্রণের দাগ দূর করতে বা হালকা করতে পারে। তাই পুরো মুখে ব্যবহার না করে শুধু দাগ ছোপের উপরে ব্যবহার করতে পারেন।
-ব্লিচ করার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন। তারপর মুখ ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে নিন, তারপর ব্লিচ করুন।
-এখানে যে উপায় গুলো বলা হয়েছে সব গুলোই কার্যকরী, কিন্তু মনে রাখবেন এগুলো মাস্ক না। সুতরাং যতক্ষণ রাখতে বলা হয়েছে ততক্ষণই রাখবেন।
-যদি ত্বকে খুব বেশি জ্বালা করে তবে ব্লিচ ধুয়ে ফেলুন। পরের বার থেকে লেবুর রস, হলুদ এগুলোর পরি্মাণ কমিয়ে দিন।
-লেবুর রস, হলুদ আলুর রস ও টমেটোর রস ত্বকে ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। মেলামিন কমায় ও দাগ দূর করে। কিন্তু এগুলো খুবই acidic হয়। যা সবার স্কিনে  মানাতে নাও পারে। তাই ব্যবহার করার আগে গলায় বা চিবুকে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন।
– হলুদ গুঁড়ার বদলে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। না পারলে স্কিনকেয়ার এর জন্য হলুদ আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করুন। রান্নাঘর থেকে নেবেন না।
– হলুদ ও লেবুর রস ত্বকের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। এতে করে ত্বকে রোদ লাগলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই ব্লিচ রাতে করুন আর বার ঘণ্টার মধ্যে রোদে না যাওয়ার চেষ্টা করুন।
– এই ব্লিচ গুলো হাতে পায়ে ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো হাত পায়ের ত্বক উজ্জ্বল করবে। আর সেক্ষেত্রে চাইলে লেবুর রস বা হলুদ বেশি নিতে পারেন।

সাধারন সতর্কতাঃ

-নিয়মিত ব্লিচ ব্যবহার করলে কোনভাবেই SPF 30 সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে বাইরে যাবেন না।
-যাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ আছে তারা এগুলো ব্যবহার করবেন না। ব্রণ ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে দূর করার চেষ্টা না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
-রুপচর্চায় লেবু, হলুদ যারা রেগুলার ব্যবহার করেন তারা কোন ভাবেই সাবান ব্যবহার করবেন না। মৃদু ফেসওয়াস ব্যবহার করুন।
-কোন ভাবেই রাসায়নিক ব্লিচ ব্যবহার করবেন না। এগুল ত্বককে বুড়িয়ে দেয়। রেগুলার রাসায়নিক ব্লিচ বা রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করলে চল্লিশের কোঠায়ে পৌছে আফসোস করতে হবে। রাসায়নিক ব্লিচ এর মত এই natural ব্লিচ এর কোন side effects নেই।
-রোদে পুড়ে গেলে যত তাড়াতাড়ি পারেন ব্যাবস্থা নিন। ট্যান একবার বসে গেলে দূর করা কঠিন হয়ে যায়।
এই নিয়ম গুলো মেনে চলে ধৈর্য ধরে নিয়মিত ব্যবহার করলে অবশ্যই আপনার ত্বকের অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ ছোপ দূর হবে। মনে রাখবেন কেমিকাল ব্লিচ, ফেয়ার পলিশ এগুলো আধা ঘণ্টায় ঝকঝকে ত্বক দিলেও পরে পস্তাতে আপনাকে হবেই। এমন কী parlour পরিচিত হলে তারাও বলে এগুলো ব্যবহার করা ঠিক নয়। এর চেয়ে বরং নিয়মিত একটু ত্বকের যত্ন নিন, এসব বিপদজনক procedure এর দরকারই পড়বে না।


No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages