সোমবার রাত নয়টার দিকে প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ে পানি ঢুকে ডুবতে থাকে লাইটার জাহাজ এমভি বর্ষণ-৩। বিদঘুটে অন্ধকারে সবাই জড়ো হই জাহাজের ডেকে। এক ঘণ্টা পর জোয়ার এলে জাহাজের ওপরের অংশও ডুবেযায়। তখন সবাই বয়ার সাহায্যে ভাসতে থাকি। জোয়ারের টানে ভাসতে ভাসতে সাত-আট ঘণ্টা পর উপকূলের দেখা পাই। এ সময় ভাটা থাকলে স্রোতের টানে সাগরের দিকে চলে যেতাম।’
সন্দ্বীপের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে গতকাল সোমবার রাতে লাইটার জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া সুকানি (চালকের সহকারী) মো. ইয়াকুব সন্দ্বীপ মুঠোফোনে আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে এ বিবরণ দেন। ওই জাহাজে তিনিসহ ১২ জন ছিলেন বলে জানান তিনি।
ভোরে সন্দ্বীপের দক্ষিণ উপকূলে ভাসতে দেখে ইয়াকুব ও হাসান নামের দুজনকে উদ্ধার করেন নূর ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি।
নূর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোরে দুজনকে উপকূলের দিকে ভাসতে দেখে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসি।’
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মো. ইয়াকুব বলেন, ‘খুলনা থেকে এক হাজার টন ছাই নিয়ে কর্ণফুলী ঘাটের দিকে যাচ্ছিল লাইটার জাহাজ এমভি বর্ষণ-৩। সন্দ্বীপের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর দিয়ে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের মুখে পড়ি। এ সময় জাহাজ কাত হয়ে পানি ঢুকে পড়ে। একটু পর নিচের অংশ ফেটে যায়। তখন ভাটা থাকায় জাহাজ পুরোপুরি ডোবেনি। সবাই জাহাজের ডেকে এসে আশ্রয় নিই। তবে জোয়ারের সময় পুরো জাহাজ ডুবে যায়। তখন সাগরে ঝাঁপ দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। আশপাশে কোনো জাহাজ না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ উদ্ধারও করতে পারেনি। জোয়ার থাকায় স্রোতের টানে উপকূলের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল আমাদের। একেকজন দূরে সরে যায়। ভোর ছয়টার দিকে হাসানসহ আমরা দুজন তীরের দিকে আসি।’
লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নবী আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পর কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ জন উদ্ধার হয়েছেন এবং একজন নিখোঁজ আছেন। তবে দীর্ঘক্ষণ সাগরে ভাসতে থাকায় কয়েকজন খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা এখন বিশ্রামে আছেন। তাঁদের সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামে আনা হবে।
No comments:
Post a Comment