কীভাবে খুব সহজেই পাবেন বিনামূল্যে আইনি সহায়তা? - সময়ের প্রতিধ্বনি

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, August 26, 2016

কীভাবে খুব সহজেই পাবেন বিনামূল্যে আইনি সহায়তা?


আইনের দৃষ্টিতে দেশের সব নাগরিকই সমান। প্রত্যেকেই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিককে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের দরিদ্র বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময় টাকা-পয়সার অভাবে মামলা পরিচালনা করতে পারে না। এতে তারা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সহযোগিতায় দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’ পাস করে। সারা দেশের বেশিরভাগ মানুষের এ বিষয়ে এখনো পুরোপুরি ধারণা না থাকায় তারা বিনামূল্যে আইনি সহায়তা নিতে পারছেন না। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।   
আইনগত সহায়তা কারা পাবেন  
যারা বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাবেন-
১. কর্মক্ষম নন, আংশিক কর্মক্ষম, কর্মহীন বা বার্ষিক ৬,০০০ টাকার ঊর্ধ্বে আয় করতে অক্ষম মুক্তিযোদ্ধা
২. বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি
৩. ভিজিডি কার্ডধারী দুঃস্থ মহিলা
৪. পাচারের শিকার নারী বা শিশু
৫. এসিডদগ্ধ নারী বা শিশু
৬. আদর্শ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত যেকোনো ব্যক্তি
৭. অসচ্ছল বিধবা এবং স্বামী পরিত্যক্তা দরিদ্র নারী
৮. শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কারণে উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তি এবং সহায় সম্বলহীন প্রতিবন্ধী
৯. আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অসমর্থ ব্যক্তি
১০. বিনা বিচারে আটক এমন ব্যক্তি যিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আর্থিকভাবে অসচ্ছল
১১. আদালত কর্তৃক বিবেচিত আর্থিকভাবে অসহায় কিংবা দরিদ্র কোনো ব্যক্তি
১২. জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত আর্থিকভাবে অসহায় কিংবা দরিদ্র কোনো ব্যক্তি
১৩. আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থ-সামাজিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কোনো ব্যক্তি যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্বীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মামলা পরিচালনা করতে অসমর্থ
যেখানে যোগাযোগ করতে হবে
উচ্চ আদালত এবং দেশের প্রত্যেক জেলা আদালতে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করতে একটি কমিটি রয়েছে। প্রত্যেক কমিটির আহ্বায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আপনি আইনি সহায়তা পেতে পারেন।
আবেদনের নিয়মাবলি 
আইনি সহায়তা পেতে হলে প্রথমে আইনগত সহায়তা পাওয়ার জন্য কোনো ব্যক্তি তার নাম, পূর্ণ ঠিকানা এবং সহায়তা চাওয়ার কারণ উল্লেখ করে একটি সাদা কাগজে আবেদন বা দরখাস্ত করতে হবে ।
যে বিষয়ে আইনি সহায়তা চাওয়া হচ্ছে তা যদি হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টে বিচারের বিষয় হয় তাহলে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার চেয়ারম্যান বরাবর এবং অন্যান্য আদালতের বিচারের বিষয় হলে জেলা কমিটির চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে।
এ ছাড়া কোনো জেলা কমিটি বরাবর সহায়তা পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র বা দরখাস্ত দাখিল করা হলে সংস্থা বা জেলা কমিটি তাতে একটি নাম্বার দিয়ে আবেদনপত্রটির ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংস্থা বা জেলা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের ব্যবস্থা করবে।
আবেদনপত্রে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে যদি সংস্থা বা জেলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব না হয় তবে আবেদনকারীকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহের জন্য পরামর্শ দিবেন।
এরপর সংস্থা বা জেলা কমিটির সভায় আবেদনপত্রটির আলোকে আইনগত সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা সংস্থা বা জেলা কমিটি কর্তৃক আবেদনকারীকে জানানো হবে। যদি কোনো আবেদনকারীর আবেদন জেলা কমিটি কর্তৃক নাকচ হয় তাহলে সেটা মঞ্জুরির জন্য ও আবেদনকারী তার আবেদন নাকচ হওয়ার তারিখ হতে ৬০ দিনের মধ্যে সংস্থার কাছে আপিল পেশ করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে সংস্থার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages