মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাও হিলারির প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
এবার ফিরে দেখা যাক ওবামার পৈতৃক বাড়ি কেনিয়ার দিকে। তাদের প্রিয় পুত্র এখন প্রেসিডেন্ট কিন্তু ওবামাকে সমর্থন করলেও পরবর্তী তার দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করছেন না তারা।
বারাক ওবামার সৎ-ভাই মালিক ওবামা মার্কিন গণমাধ্যম ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘আমি রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করি। কারণ তিনি সৎ এবং নীতিবান। তিনি এমন একজন লোক যিনি মানুষকে সাহায্য করেন। ট্রাম্প যদি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হন তাহলে সেটি আমেরিকান নাগরিকদের জন্য সবচাইতে বড় সুযোগ।’ হিলারির ব্যাপারে মালিক বলেন, আমি তাকে পছন্দ করি না। এ সময় তিনি তার ভাই বারাকের হিলারিকে সমর্থনের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
তিনি বলেন, ক্লিনটন অসৎ এবং মিথ্যাবাদী। তিনি প্রতিনিয়ত তার ই-মেইল ব্যবহার নিয়ে মিথ্যে বলে যাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর কেনিয়াও আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোর জন্য যথাযথ সহায়তা না করায় বারাকের প্রতিও অসন্তুষ্ট মালেক ওবামা। তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট ওবামাকে ভালবাসি কারণ সে আমার ভাই। কিন্তু ওবামা হিপ্রোকেট। তিনি কাউকে সাহায্য করেন না। গত আট বছরে তিনি পরিবারের জন্য কিছুই করেন নি। আমরা তার সাহায্যের জন্য বৃথা অপেক্ষায় ছিলাম।
কিছু স্থানীয় বারাক ওবামার ভাইয়ের এই মতের সাথে একমত হলেন। কারণ ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সাব-সাহারান আফ্রিকায় গিয়েছেন। শেষ মেয়াদে কেনিয়া সফরে গেলেও তার পৈতৃক বাড়ি কোগেলোতে যান নি। এতে গ্রামবাসীরা হতাশ হয়েছেন। তবে তারা বলেন, ২০০৬ সালে মার্কিন সিনেটর থাকাকালে তিনি এখানে আসেন। গ্রামের একজন ট্রাক ড্রাইভার জেপেট ওতিনো বলেন, ‘আমি ওবামাকে সমর্থন করি না এবং তার সমর্থকদেরও সমর্থন করি না। কারণ তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আমাদের ভুলে গিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বারাক ওবামার সাথে তার এই ভাইয়ের সম্পর্ক নেই বললেই চলে, ওবামার মা অ্যান ডানহাম বিয়ের তিন বছর পরই তার বাবাকে তালাক দেন। অন্যদিকে ওবামার ভাই মালিক ও তার সৎ বোন ওবামার সৎ-দাদী সারাহ ওবামার (৯৫) সাথে থাকতেন।
যদিও গত এক দশকেও বারাক ওবামা তার জন্মস্থানে আসেন নি কিন্তু কোগেলো অনেক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে, এখানে বিদ্যুৎ এসেছে, রাস্তা করা হয়েছে এবং অন্যান্য উন্নয়ন হয়েছে। ওবামা পরিবারের সূত্র থাকার সুবাদে গত আট বছর ধরে এই কোগেলো গ্রাম পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। দাদীর নামে ওবামার তৈরি করা মামা সারাহ ওবামা ফাউন্ডেশন বিধবা এবং এতিমদের সহায়তা করে এবং এইসআইভি নিয়ে কাজ করে। মালিক ওবামার প্রতিষ্ঠিত ‘দ্য বারাক ওবামা ফাউন্ডেশন’ পরিস্কার পানি সরবরাহ নিশ্চিতের কাজ করে।
ক্লিনটন সমর্থক উইলিস অনইয়ানগো (২৮) বলেন, আমি অবশ্যই হিলারিকে সমর্থন করি ও তাকেই ভোট দিব। তিনি ঠেলাগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
অনইয়ানগো বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ক্লিনটন যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে কোগেলো’র আবার উন্নয়ন হবে। তিনি বলেন, গ্রামবাসী ক্লিনটনকে বিশ্বাস করে। তিনি প্রেসিডেন্টের সবচাইতে ভাল বন্ধু এবং তিনি আমাদের খেয়াল রাখবেন।
সবচাইতে মজার বিষয় হল ৮ নভেম্বরের আগেই কোগেলোতে মার্কিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে এই গ্রামের অধিবাসীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচন করবেন। আমাদের এখানকার নির্বাচন এটি নির্দেশ করবে যে, আমেরিকাতে কিরুপ ভোট হবে। যদি ক্লিনটন এখানে জয় লাভ করেন, আমরা আশা করব তিনি প্রেসিডেন্টিয়াল নির্বাচনেও জয় লাভ করবেন।
কোগেলোতে এর আগে ২০০৮ ও ২০১২ সালেও এরকম মজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বারাক ওবামার কাজিন বলেন, আমরা ক্লিনটনকে সমর্থন করব, তিনি আমাদের ছেলের সাথে আছেন। আমি নিশ্চিত যে তিনিই জিতবেন।
ওবামার পৈতৃক বাড়ির এক বাসিন্দা উইলিস বলেন, ক্লিনটন আমাদের ছেলে ওবামাকে দুই-দুইবারের মত সমর্থন করেছেন।
No comments:
Post a Comment