মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো কিডনি। শরীরের সুস্থতার জন্য কিডনির সুস্থতা যেমন প্রয়োজন, তেমনই কিডনির সমস্যার কারণে গুরুতর ক্ষতি হতে পারে শরীরের। কিন্তু কিডনির রোগ সম্পর্কে আগাম সতর্কতা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে এই রোগের ফলে ক্ষতি।
কীভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি আক্রান্ত হয়েছে কিনা?
১. পিঠের নীচের দিকে ব্যথা: কিডনির রোগের সবচেয়ে কমন উপসর্গ। সাধারণত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে কোমরের একদিকে অথবা দুদিকেই একটানা ব্যথা দেখা দিতে পারে। এমনটা পর পর কয়েকদিন চললে আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে।
২. ত্বকে র্যাশ, শুষ্কতা, চুলকানি: কিডনি অসুস্থ হয়ে পড়লে শরীর থেকে বর্জ্য ঠিকভাবে বাইরে যেতে পারে না। ফলে ত্বকে র্যাশ, চুলকানি বা শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে এই ধরনের সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
৩. প্রস্রাবে সমস্যা: যদি প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরয়, প্রস্রাব করতে অসুবিধা বোধ হয়, ফেনা ফেনা প্রস্রাব হয় কিংবা ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব হয়ে যায়, তাহলে তা কিডনির রোগের লক্ষণ হতে পারে।
৪. প্রস্রাবে পরিবর্তন : কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি হয় বা কম হয়। বিশেষত রাতে এই সমস্যা বাড়ে। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।
৫. প্রস্রাবের সময় ব্যথা : প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। মূলত প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া- এগুলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের লক্ষণ। যখন এটি কিডনিতে ছড়িয়ে পড়ে তখন জ্বর হয় এবং পিঠের পেছনে ব্যথা করে।
৬.প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া : প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে এটি খুবই ঝুঁকির বিষয়।এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ।
৭. শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলা ভাব: যদি মুখ, হাত, পা, গোড়ালি বা পায়ের পাতা হঠাৎ করে ফুলতে শুরু করে তাহলে তা কিডনির রোগের গুরুতর অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।
৮. ক্লান্তি ও দুর্বল ভাব: কিডনির রোগে আক্রান্ত মানুষদের শরীরের বিভিন্ন কোষে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। তার ফলে দুর্বলতা ও ক্লান্তি ভাব দেখা দেয়।
৯. মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া : লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিস্কে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়। এতে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়।
১০. সবসময় শীত বোধ হওয়া : কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।
১১. ত্বকে র্যাশ হওয়া : কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র্যাশ তৈরি করতে পারে।
১২. বমি বা বমি বমি ভাব : রক্তে বর্জ্যনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
১৩. ছোটো ছোটো শ্বাস : কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।
১৪. পেছনে ব্যথা : কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।
No comments:
Post a Comment