ইউরেনিয়ামের প্রাচুর্য: সুদিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ - সময়ের প্রতিধ্বনি

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, August 23, 2016

ইউরেনিয়ামের প্রাচুর্য: সুদিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ


নদীবাহিত বালুতে মহামূল্যবান খনিজ ও রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে ময়মনসিংহ অঞ্চলে। গারো পাহাড় বাহিনী নদী সোমেশ্বরীর পর এবার ইউরেনিয়ামের প্রাচুর্য মিলেছে ব্রক্ষপুত্রে।
বাংলাদেশের যে স্থানে ব্রক্ষপুত্র প্রবেশ করেছে সেখানেই মূল্যবান সুষ্প্রাপ্য ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর ও কার্বন মাইনিং সংস্থার জরিপ ও অনুসন্ধানে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ব্রক্ষপুত্রের ২০ মিটার গভীরতায় বালুর নমুনা সংগ্রহ করে দেশে-বিদেশে গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ব্রক্ষপুত্রের মজুদ ইউরিনিয়ামের বাণিজ্যিক আহরণের বিপুল সম্ভাবনা।
বিশেষজ্ঞ সূত্র জানিয়েছে, ব্রক্ষপুত্রে ৯ শতাংশ আহরণযোগ্য ভারী খনিজ রাসায়নিক পদার্থ আছে। প্রতি টনে ১ গ্রাম ইউরেনিয়াম পাওয়া গেলে তা আহরণযোগ্য। যেখানে ইউরেনিয়ামের মাত্রা ৭ শতাংশ হলেই বাণিজ্যিকভাবে আহরণযোগ্য বলে বিবেচিত হয় সেখানে ব্রক্ষপুত্রে ২ শতাংশ ইউরেনিয়ামের মাত্রা বেশি আছে।
জানা গেছে, জেএসবি ব্রক্ষপুত্র ছাড়াও দেশের যমুনা, পদ্মা নদীতে বালুর রাসায়নিক ও খনিজ তাত্ত্বিক জরিপে বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে। সরকার এক্ষেত্রে কার্বন মাইনিং বাংলাদেশ লিমিটেডকে ব্রক্ষপুত্র ও যমুনার ৪’শ হেক্টর নদীর বালুর ওপর অনুসন্ধান ও জরিপ চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
সেক্ষেত্রে নিবিড় জরিপ ও অনুসন্ধান চালিয়েছে সংস্থাটি। কার্বন মাইনিং ও জেএসবির অনুসন্ধান ও জরিপের ফলাফল ইতিবাচক হওয়ায় সরকার জেএসবিকে প্রকল্প তৈরির দায়িত্ব দিয়েছে। জেএসবি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে সূত্রটি দাবি করে।
একই সূত্র মতে, প্রকল্পে খনিজ পদার্থ ও রাসায়নিক বিস্তৃতি, ব্যাপকতা, খনিজ রাসায়নিক আহরণ পরিমাণ ও পদ্ধতি নিয়ে জরিপ ও অনুসন্ধান চালানোর বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে প্রথম গারো পাহাড়ের সোমেশ্বরী নদীতে মূল্যবান ইউরেনিয়ামের আভাস পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও ধোবাউড়া উপজেলার নেতাই, সোমেশ্বরী ও কংশ নদীর মোহনায় মূল্যবান খনিজ পদার্থ শিলিকা বালু পাওয়া যায়। এদিকে কলমাকান্দা উপজেলার উব্ধাখালী নদীতে কয়লার বিকল্প মূল্যবান গিলাইন পাথর পাওয়া যায়।
সূত্র জানায়, এ ব্যাপারে সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক জরিপ সম্পাদন করা হয়। বিশেষজ্ঞ দল জরিপ শেষে গারো পাহাড়ের নদীগুলোতে প্রাপ্ত ইউরেনিয়ামের মাত্রা কম থাকায় তা আহরণযোগ্য নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। কিন্তু একই সঙ্গে তারা ব্রক্ষপুত্র নদীর ইউরেনিয়াম সম্ভাবনার ওপর আলোকপাত করেন।
এ ব্যাপারে পরবর্তীতে ও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে জেএসবি নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে দেশের বিভিন্ন নদীবাহিত বালুতে ইউরেনিয়ামের মাত্রা অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়। এক্ষেত্রে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কুড়িগ্রাম, বৃহত্তর সিলেট ও পদ্মা অববাহিকায় জরিপ চালানো হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড.হরিপদ শীল বলেন, সম্প্রতি জেএসবি জরিপ চালিয়ে ব্রক্ষপুত্রের প্রবেশ পথ বা বাংলা ব্রক্ষপুত্রের উৎস পয়েন্ট কুড়িগ্রাম, যমুনায় প্রচুর পরিমাণ খনিজ ও রাসায়নিক সম্পদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে।
তিনি বলেন, আরো বিশেষজ্ঞ দিয়ে দ্রুত এ বিষয়টি যাচাই করে নিশ্চিত হওয়া গেলে উত্তোলন করে তা দ্রুত কাজে লাগানো দরকার। অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ধরনের ভারী খনিজ বা মিনারেল রাসায়নিক দ্রব্য বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের সম্ভাবনায় বাংলাদেশ এখন সুদিনের অপেক্ষায়। বিশেষজ্ঞ মহল এমনটাই ভাবছেন।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages