আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত ইকামা পরিবর্তন এবং বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে যাওয়া সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। এই সময় মধ্যে বৈধতা গ্রহণ করে সৌদি আরবে থাকতে হবে অথবা দেশে ফিরে যেতে হবে।
রবিবার প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক তথ্য বিবরণীতে একথা বলা হয়েছে।
ইকামা পরিবর্তন, অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাদের ওয়ার্ক পারমিটের (ইকামা) মেয়াদ ৬ এপ্রিল ২০১৩ তারিখের আগে শেষ হয়ে গেছে তারা কোনোরকম শাস্তি এবং জরিমানা ছাড়া আগের নিয়োগকর্তার (কফিল) কাছে ফেরত যেতে পারবেন অথবা নতুন নিয়োগকর্তার কাছে ট্রান্সফার হতে পারবেন।
এছাড়া যারা তাদের কফিলের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন (হুরুপপ্রাপ্ত), তারা সমঝোতার মাধ্যমে পূর্বের কফিলের কাছে ফিরে যেতে পারবেন অথবা নতুন নিয়োগকর্তার কাছে ট্রান্সফার হতে পারবেন।
আর গৃহকর্মীরা ইমিগ্রেশন বিভাগ (জাওয়াজাত) এবং কোম্পানির কর্মীরা শ্রম অফিসের (মক্তব আল আমেল) মাধ্যমে ট্রান্সফার হতে পারবেন; যাদের কফিল নেই, তারাও একই পদ্ধতি অনুসরণ করে নতুন কফিলের কাছে কাজ নিয়ে নিয়মিত হতে পারবেন অথবা এক্সিট ভিসা নিয়ে দেশে ফিরে যেতে পারবেন।
হজ এবং ওমরাহ ভিসায় এসে অবৈধ হওয়াদের বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যারা ৩ জুলাই ২০০৮ এর আগে হজ অথবা ওমরাহ ভিসায় এসে থেকে গেছেন তারা বর্তমান সুযোগ গ্রহণ করে কাজে নিয়োজিত হতে পারবেন।
হজ এবং ওমরাহ ভিসায় এসে থেকে যাওয়া ব্যক্তিরা গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নিয়োজিত হতে পারবেন। এক্ষেত্রে জাওয়াজাতের মাধ্যমে বৈধতা গ্রহণ করতে হবে; তারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও কাজ করতে পারবেন।
তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রথমে তাদের তথ্য জাওয়াজাতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। তারপর শ্রম দপ্তর সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োগের উপযুক্ততা যাচাই করে তাদেরকে নিয়োগের অনুমতি প্রদান করবে। আ যারা ৩ জুলাই ২০০৮ এর পরে হজ অথবা ওমরাহ ভিসায় এসে থেকে গেছেন, তাদের আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরে যেতে হবে।
ইকামা ট্রান্সফারের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান নিয়োগকর্তা ইকামা চালু না করলে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ট্রান্সফার হওয়া যাবে। বৈধভাবে নিয়োজিত গৃহকর্মীরা কোনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ট্রান্সফার হতে চাইলে তাদেরকে বর্তমান কফিলের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে শ্রম অফিসের মাধ্যমে ট্রান্সফার হতে হবে।
কোম্পানি নিজ অফিস থেকেই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ইকামা ট্রান্সফার করে নিতে পারবে। যেসব কোম্পানির পাসওয়ার্ড নেই সেসব কোম্পানির প্রতিনিধি শ্রম অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ইকামা ট্রান্সফার করাতে পারবেন। বৈধভাবে কর্মরতদের ইকামার মেয়াদ উর্ত্তীণ না হয়ে থাকলে বর্তমান কফিলের অনুমতি নিয়ে ইকামা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
অবৈধ হয়ে যাওয়া বিদেশিদের দেশে ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র যথা- ইকামার কপি অথবা পাসপোর্টের ভিসার কপি অথবা ফিঙ্গারপ্রিন্টের কপি অথবা জাওয়াজাত প্রিন্টের কপিসহ দূতাবাস কর্তৃক ইস্যুকৃত আউটপাস জমা দিয়ে এক্সিট ভিসা গ্রহণ করতে হবে। এভাবে এক্সিট ভিসা নিয়ে দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনোরকম ফি কিংবা জরিমানা দিতে হবে না।
অবৈধ হয়ে যাওয়া কর্মীদের নতুন কফিলের কাছে ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে পুরাতন কফিলের ছাড়পত্র গ্রহণের প্রয়োজন হবে না। পুরাতন কফিলের সাথে লেনদেন সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে বিরোধ থাকলে কোর্টের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।
সৌদি সরকার ‘ফ্রি ভিসা’ বন্ধ করে দিয়েছে। সুতরাং যারা ‘ফ্রি ভিসা’য় কাজ করছেন, তাদেরকে আবশ্যিকভাবে ৩ জুলাই মধ্যে প্রাইভেট কোম্পানিতে ট্রান্সফার হতে হবে। ইকামা ট্রান্সফারের আগে নিয়োগকর্তার (কফিল) সাথে বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি ঠিক করে নিবেন।
সৌদি আরবের যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৬ এপ্রিলের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে কোনো অবৈধ ও বৈধ বিদেশি কর্মী ট্রান্সফার হতে পারবেন না। জাল পাসপোর্ট, ইকামা এবং ডকুমেন্ট ব্যবহারকারীদের সৌদি কর্তৃপক্ষ কঠোর শাস্তি প্রদান করবে।
আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে সকল অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বৈধতা গ্রহণ করে সৌদি আরবে থাকতে হবে অথবা দেশে ফিরে যেতে হবে। এ সময়ের পরে যদি কোনো বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে সৌদি আরবে বসবাস করেন, তবে তাকে জেলসহ বিপুল অঙ্কের জরিমানা প্রদান করতে হবে।
পুরাতন পাসপোর্ট নবায়ন, নতুন পাসপোর্ট ইস্যু এবং আউটপাস প্রদানের জন্য রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস, নর্থ অরুবা স্ট্রিট, আল-ওয়ারুদ কোয়ার্টার্স, সুলাইমানিয়া, রিয়াদ, সৌদি আরব। ফোন: ৪১৯৫৩০০, ৪১৯২৯৫৪, ১২১৫২০৯১।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, কিলো-৩, মক্কা রোড, নাজলাহ ডিস্ট্রিক্ট, জেদ্দা, সৌদি আরব। ফোন: ৬৮৭৮৪৬৫, ৬৮৯৪৭১২, ৬৩৩৫০৮২ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
No comments:
Post a Comment