বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় মুসলমান - সময়ের প্রতিধ্বনি

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Saturday, August 27, 2016

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় মুসলমান


আমাদের মাতৃভাষা বাংলা এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা। রাষ্ট্রীয় ও জীবনের সর্বস্তরে এখন তার অবাধ ব্যবহার আমাদের গৌরবান্বিত করে। মৌলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীর একটি উক্তি এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে। তিনি বলেছিলেন, রাজভাষা ও মাতৃভাষা অভিন্ন হইলে দেশের ও জাতির উন্নতির পথ যেরূপ সুগম হয়, বিভিন্নাবস্থায় সেরূপ হইতে পারে না।

তিনি যখন এ উক্তি করেছিলেন তখন ব্রিটিশের রাজত্ব চলছে। তার এই উক্তির ভেতর দিয়ে এ কথা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, তার সমকালে তিনি মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মর্যাদা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন এবং মাতৃভাষাচর্চার অভাব যে মুসলমানদের দুর্দশার প্রধান কারণ, এ কথাও তিনি স্পষ্টভাষায় ব্যক্ত করেছিলেন।
মধ্যযুগে, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে এখনকার মতো মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার অবাধ ছিল না। প্রথম দুই আমলে বাংলা ভাষা এককভাবে রাষ্ট্রভাষা ছিলই না; এবং এর ব্যবহার নিয়ে বাঙালি মুসলমানদের ভেতর দ্বিধা ছিল। তবুও দেখা যায়, শিক্ষিত ও সাহিত্যানুরাগী মুসলমানদের ভেতরে বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা একেবারে থেমে থাকেনি। পাকিস্তান আমলে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে বাঙালি তরুণদের বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করতে হয়েছিল। এ ছাড়াও বাংলা ভাষার ওপর নানা ধরনের অনাবশ্যক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার মৌলিক রূপ ও চরিত্র বদলিয়ে ফেলার অপচেষ্টা সে সময় কম হয়নি। কিন্তু সে সময় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ড. মুহম্মদ এনামুল হক, সাংবাদিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবু জাফর শামসুদ্দীন, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী প্রমুখ পণ্ডিত ও সাহিত্যিকের প্রবল যুক্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মুখে এবং ভাষা আন্দোলনের উত্তাল স্রোতে তা ভেস্তে যায়। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীকার আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে বিশ্বের মানচিত্রে।
আমরা এবার একটু পেছনের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে পারি। প্রথমেই মধ্যযুগ। মাতৃভাষা বাংলা, আমরা জানি, সাহিত্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে উৎসাহিত করেছিলেন মুসলমান সুলতান ও রাজন্যবর্গ। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা সত্ত্বেও এক দিকে সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের রক্তচক্ষু ও অপর দিকে মুসলমান সমাজের বিরোধিতা উভয় সম্প্রদায়ের সাহিত্যিক-কবিদের সাহিত্যচর্চার প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। মধ্যযুগের সাহিত্য মূলত ধর্মসাহিত্য। দেবভাষা সংস্কৃত থেকে ‘অনার্য ভাষা’ বাংলায় শাস্ত্রের রূপান্তর যেমন সেকালের সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের কাছ থেকে ছাড়পত্র পায়নি, তেমনি আরবি-ফারসি থেকে বাংলায় কুরআন-কেতাবের কথা ভাষান্তরের ব্যাপারেও মুসলমান সমাজের একটি বড় অংশ তেমন উদ্যোগী ছিল না। কিন্তু সেকালেও বাঙালি মুসলমানদের অধিকাংশ ছিল বাংলাভাষী। সুফিদের কাছে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হলেও সাধারণ মুসলমানরা শরা-শরিয়ত সম্পর্কে ছিলেন অজ্ঞ। তাদের কাছে ইসলাম ধর্মের এই মূল বিষয়গুলো পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ তারা নিয়েছিলেন।
গবেষকের ভাষায়
শাস্ত্রকথা বাংলায় লেখা বৈধ কি না সে বিষয়ে সতের শতক অবধি মুসলিম লেখকরা নিঃসংশয় ছিলেন না, শাহ মুহম্মদ সগীর, সৈয়দ সুলতান, হাজী মুহম্মদ, আবদুল নবী, আবদুল হাকিম প্রমুখ কবির উক্তিতে আমরা দ্বিধার আভাস পেয়েছি। অতএব, তবু যারা এ সময় বাংলায় শাস্ত্রগ্রন্থ রচনা করেছেন, তারা দ্বিধা ও পাপের ঝুঁকি নিয়েই করেছেন, এতে তাদের স্বধর্মপ্রীতি, লোক-হিতৈষণা, মনোবল ও যুক্তিপ্রিয় মনের পরিচয় মেলে।
শেখ মুত্তালিব কেফায়তুল মুসল্লিন এবং কায়দানী কিতাবের লেখক। তিনিও সপ্তদশ শতাব্দীর কবি। তিনি এসব গ্রন্থ বাংলায় লিখতে গিয়ে যে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন, তার কিছু উদ্ধৃতি এখানে দেয়া হলো। তিনি লিখেছেন,
আরবিতে সকলে না বুঝে ভালো মন্দ
তে কারণে দেশীভাষে রচিলুঁ প্রবন্ধ।
মুসলমানি শাস্ত্রকথা বাঙ্গালা করিলুঁ
বহু পাপ হৈল মোর নিশ্চয় জানিলুঁ।
কিন্তু মাত্র ভরসা আছএ মনান্তরে
বুঝিয়া মুমীন দোয়া করিব আমারে।
মুমীনের আশীর্বাদে পুণ্য হইবেক
অবশ্য গফুর আল্লাহ পাপ ক্ষেমিবেক
এসব জানিয়া যদি করএ রক্ষণ
তেবে সে মোমোর পাপ হইব মোচন।
মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম তৎকালীন সমাজের মাতৃভাষার প্রতি উপেক্ষার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি নিজেও ইসলামবিষয়ক গ্রন্থাদি রচনা করেছেন বাংলায়। তার গ্রন্থাবলির নামঃ সভারমুখতা, নসিয়তনামা বা সাবাবনামা তথা শাহাবউদ্দীননামা এবং দোররে মজলিস। শেখ মুত্তালিবের পিতা শেখ পরাণ কায়দানী কিতাব ও নূরনামা গ্রন্থের রচয়িতা। এ সময় লিখিত আশরাফের কিফায়তুল মুসলেমিন এবং মুজাম্মিলের নীতিশাস্ত্রবার্তা এবং আলাউলের তোহফা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। এ ছাড়া মুসলিম আমলে রোমান্টিক কাব্যও বঙ্গানুবাদের দ্বারা মধ্যযুগে ধর্ম সাহিত্যের পাশাপাশি নতুন স্বাদ এনে দেয়। কোরেশী মাগন, আলাউল, শা’বারিদ খান প্রমুখ কবিরা সে যুগে বাংলা সাহিত্যের চর্চা অব্যাহত রেখেছিলেন বলেই আমরা সে যুগের সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিবৃত্ত পেয়েছি। এ ক্ষেত্রে শ্রদ্ধার সাথে আমরা স্মরণ করি পুঁথি সংগ্রাহক ও গবেষক আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদকে। মধ্যযুগে মুসলিমদের বাংলা সাহিত্যচর্চার নজির তুলে ধরার কৃতিত্ব তারই। পরে অধ্যাপক আলী আহমদও পুঁথি সংগ্রহে অবদান রেখেছেন।
ব্রিটিশ আমলে মধ্যযুগের এই আলোকিত দিকটি নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষা বাংলা কেবল থেকে গেল দৈনন্দিন কার্যাবলিতে, সাহিত্যের দিকটি হলো উপেক্ষিত। কেবল তাই নয় ইংরেজি ও বাংলা শিক্ষা থেকেও তারা দূরে সরে গেল। অভিজাত নাগরিক মুসলমানদের উর্দুকে মাতৃভাষা হিসেবে গ্রহণ করতে দেখি। কিন্তু গ্রামবাংলার অসংখ্য মুসলমানের মাতৃভাষা তখনো বাংলা কিন্তু এই অন্ধকার বেশি দিন থাকেনি। বাঙালি মুসলমানদের এই হতদশা থেকে তুলে আনার জন্য প্রশস্তহৃদয় শিক্ষিত মুসলমানরাই ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন।
মাতৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে এরা কেবল ভেবেছেন তাই নয়, মাতৃভাষা বাংলায় তারা সাহিত্যচর্চার ওপর জোর দিয়েছেন। যে গুরুত্ব দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে মাতৃভাষাকে ব্যবহার করেছিলেন মধ্যযুগের মুসলিম কবিরা, তারই পুনরাবৃত্তি করতে হলো ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের শিক্ষিত মুসলমানদের। মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদীকে মাতৃভাষার গুরুত্ব বুঝাতে হয় ওই সব উন্নাসিক শিক্ষিত মুসলমানদের, যারা মাতৃভাষা চর্চাকে কেবল উপেক্ষা করেননি, এ ব্যাপারে কোনো আগ্রহ বোধ করেননি। ইসলামাবাদী সাহেব মাতৃভাষা কী এবং তার গুরুত্ব সম্পর্কে লিখেছেনঃ
মাতৃক্রোড়ে থাকিতেই শিশু আধআধ স্বরে স্বভাবের প্রেরণায় মুখে যে কথা ব্যক্ত করে, তাহাই মাতৃভাষা। এই হিসেবে বাংলা বাঙ্গালার পৌনে ষোল আনা লোকের মাতৃভাষা। ইহাতে হিন্দু মোছলমানের কোনো পার্থক্য নাই। ঢাকা, কলিকাতা, মোর্শেদাবাদ ও চট্টগ্রাম টাউনের মোছলমানের ভাষা মাতৃভাষা কিংবা বিকৃত উর্দু ও বাংলায় মিশ্রিত হইয়া গেলেও তাঁহারা উভয় ভাষাতেই মনোভাব প্রকাশ করিতে অভ্যস্ত বরং তাঁহাদের সংসার জীবনের প্রত্যেক স্তরেই তাঁহারা উর্দু অপেক্ষা বাংলার অধিকতর মুখাপেক্ষী।
খাতাপত্র, দলিল দস্তাবেজ ও পত্র ব্যবহার সমস্তই তাহাদিগকে বাংলাতেই করিতে হয়। সুতরাং বাংলা যে তাহাদেরও মাতৃভাষা, ইহাতে দ্বিমত হইতে পারে না।
সাহিত্যের বাহন সম্পর্কে জ্ঞানতাপস প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র উক্তি এখানে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তিনি বলছেন,
বাহন উপযুক্ত না হলে কেউ তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারে না। লক্ষ্য লাভ করতে গেলে সাহিত্যের বাহন উপযুক্ত হওয়া চাই। সেই বাহন মাতৃভাষা।
আর একজন মনীষীর নাম আমরা স্মরণ করতে চাই। তিনি খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ। ব্রিটিশ ভারতের প্রথম ভারতীয় এবং মুসলমান এডিপিআই কেবল শিক্ষাবিদ ছিলেন না, ছিলেন সমাজসেবী এবং সুফি সাধক। তিনি তার দায়িত্ব পালনকালে মুসলিমদের দুর্দশা সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত ছিলেন। তিনি মুসলিমদের শিক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, মাতৃভাষা বাংলার মাধ্যম ছাড়া স্বজাতির উন্নতি সম্ভব নয়। তিনি লিখেছেনঃ
মাতৃভূমি হিন্দুর নিকট যেরূপ আদরণীয়, মুসলমানের নিকটও তদ্রূপ। বঙ্গভাষা একের পক্ষে যেমন নিজস্ব, অপরের পক্ষেও সেইরূপ। তাই বলি, যদি বঙ্গদেশের উন্নতি চাও, যদি বঙ্গভাষার প্রাধান্য দেখিতে চাও, যদি মঙ্গলময়ের ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চাও, তবে ভাষা ব্যবচ্ছেদ হইতে বিরত হও।
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দীন খান বাহাদুর সাহেবের এই ভাষণের তিন বছর আগে প্রায় অভিন্ন উক্তি করেছিলেন। তার ভাষায়ঃ
বর্তমান সময়ে এই ভাষায় (বাংলা লেখক) নানারূপ বিপ্লব সৃষ্টি হইতেছে। এই বঙ্গে অর্ধাধিক মুসলমান। সুতরাং বলা বাহুল্য যে, বঙ্গভাষার ওপর মুসলমানের ন্যায্য অধিকার বিদ্যমান। কিন্তু এ যাবৎ বঙ্গীয় মুসলমান নানা কারণে বঙ্গভাষার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করিয়াছেন। তাহাদের মধ্যে কম লোকই ইহার সেবা করিয়াছেন। কিন্তু এখন বঙ্গীয় মুসলমানগণ বঙ্গভাষাকে ভালো মতেই চিনিয়াছেন, এই সাহিত্যের প্রতি অনাসক্তি প্রদর্শন যে জাতীয় উন্নতির পক্ষে প্রধান অন্তরায়, তাহা তাহারা খুব ভালো করিয়া বুঝিয়াছেন।
অতঃপর তিনি মাতৃভাষা বাংলা সম্পর্কে একটি উল্লেখযোগ্য প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বেশ জোরালোভাবে, তবে এইমাত্র বলিতে পারি, বাঙ্গালি মুসলমান­ যাহারা দৈনন্দিন কথাবার্তায় বাঙ্গালা ভাষাই ব্যবহার করেন, যাহাদের অস্থিমজ্জায় পর্যন্ত বাঙ্গালা ভাষা অনুপ্রবিষ্ট তাহাদের মাতৃভাষা বাঙ্গালা ছাড়া আর কিছুই হইতে পারে না।
সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যচিন্তক মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ছিলেন মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ‘বাংলা ভাষা ও মুসলমান সাহিত্য’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে মাতৃভাষা বাংলা সম্পর্কে এক অবিস্মরণীয় বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তব্যটি নিুরূপঃ
বাংলা দেশবাসী মুসলমানের মাতৃভাষা বাংলা­ সে বিষয়ে কাহারো মতবিরোধ নাই। আমরা বাঙলায় কথাবার্তা কহি, বাঙলায় স্বপ্ন দেখি, বাঙলায় চিন্তা করি, আমাদের প্রাণ বাঙালীর প্রাণ, হাসিকান্না বাঙালীর হাসিকান্না, এমন কি আমাদের রক্তমাংস বাঙালীর রক্তমাংস। অতএব, অপ্রতিরোধীয় রূপে আমাদের মাতৃভাষা­ যে দেশের মাটিতে আমাদের বাস, যে দেশের বায়ু আমাদের শ্বাস, যে দেশের ফল জলে আমরা পালিত, যে দেশের নদনদীর স্নেহধারায় আমরা পরিপুষ্ট, সেই দেশের ভাষা­ বাঙলা। এমন কথা কেহ বলিতে পারেন না যে, বাঙলা ভাষা হিন্দুর নিজস্ব ভাষা, উহা কখনো মুসলমানের ভাষা হইতে পারে। প্রকৃতপক্ষে কোন ভাষা কোনকালে বিশিষ্ট ধর্মসম্প্রদায়ের নিজস্ব খাস সম্পত্তি হয় নাই এবং বোধ হয় কোনকালেও হইবে না।
মাতৃভাষা বাংলা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েও সে স্বমহিমায় দেদীপ্যমান। মধ্যযুগে, ব্রিটিশ আমলে এমন কি পাকিস্তান আমলেও এর অপ্রতিরোধ্য গতিকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। ১৯৫২ সালে যারা বুকের রক্ত দিয়েছিলেন, তাদের স্বপ্ন এখন সার্থকতায় পূর্ণ। বাংলা সাহিত্যচর্চায় এখন সব শ্রেণীর মানুষ নিবেদিতপ্রাণ। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, ইতিহাস, নৃতত্ত্ব, প্রত্নতত্ত্ব, সমাজবিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিদ্যা ইত্যাদি এখন মাতৃভাষায় হচ্ছে। অফিস-আদালতেও এর ব্যবহার এখন স্বতঃস্ফূর্ত। ধর্মীয় বিষয়াদি বাংলায় লিখিত হওয়ায় অধিকসংখ্যক মুসলমান এর অন্তর্গূঢ় তাৎপর্য অনুধাবন করতে সক্ষম হচ্ছে।
বাংলা ভাষা বিশ্বের অষ্টমতম ভাষা। স্বাধীনতার পর থেকে মাতৃভাষায় বিভিন্ন বিষয়ে এখন গবেষণা হচ্ছে। ‘বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্র’ হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages